কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত উপজেলা ও রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় প্রতিনিয়ত মাদকের চালান ধরা পড়ছে।বিভিন্ন সময়ে দেখা যায় পুরুষেরাই এসব মাদকের কাজে জড়িত থাকে।কিন্তু সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে দেখা যাচ্ছে,পুরুষের পাশাপাশি নারীও এখন পিছিয়ে নেই এমন মরণ নেশা মাদকের কাজ থেকে।ধীরে ধীরে ইয়াবা নামক মাদকের সাথে জড়িত হচ্ছে নারীরাও।বিশেষ করে সুন্দরী নারীরাই এসব ইয়াবা পাচারের কাজে জড়িত হচ্ছে বেশী ।দিন দিন বাড়তেই আছে নারী মাদক কারবারী ও ইয়াবা পাচার কারিদের সংখ্যা ।
সুন্দরী নারীদের টাকার লোভ দেখিয়ে কৌশলে ফুসলিয়ে এসব মরণনেশা মাদক পাচারের কাজে জড়িত করছে ধরা ছোঁয়ার বাহিরে থাকা ইন্ধনদাতা বড় বড় ইয়াবার গডফাদাররা।যারা ইয়াবা বা মাদকের গডফাদার তারাই নারীদেরকে দিয়ে অল্প টাকার বিনিময়ে ইয়াবা পাচার করে কোটি কোটি টাকার আয় করছে এবং অল্প টাকার লোভ দেখিয়ে মায়েরজাত নারীদের জীবন ধ্বংস করে দিচ্ছে বলে সুশীল সমাজের অভিযোগ ।
প্রথমে নারীরা পাচার কারী হিসেবে মাদকের কাজে জাড়িত হলেও পরে তারা আস্তে আস্তে বড় ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে ওঠে। ব্যবসায়ী হওয়ার পর তারা নিজেরাই মাদক পাচার না করলেও অন্যান্য নারীদের দিয়ে মাদক পাচার কাজ চালিয়ে যায় এবং তারা গডফারের ভূমিকা পালন করে বলে সচেতন মহলের অভিযোগ।এইভাবে ক্রমাগতভাবে নারীরা মাদক সেবনকারী ,পাচারকারী,মাদক ব্যবসায়ী হিসেবে গড়ে ওঠে।
এদিকে উখিয়া টেকনাফ রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা হওয়ায় দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত এনজিওর কর্মীরাও টাকার লোভে মাদক পাচার এবং ব্যবসার সাথে জড়িত হয়ে যাচ্ছে । অনেক এনজিও কর্মী নারী পুরুষ মিলে সময়ে অসময়ে কক্সবাজরের বিভিন্ন আবাসিক হোটেলে মাদকের আড্ডা দিতে যায় বলেও অভিযোগ ওঠেছে ।
কিছু দিন আগে আবাসিক হোটেলে বসে মাদক সেবনের একটা ভিডিও ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে ।যে ভিডিওতে নারী পুরুষ মিলে ইয়াবা সেবনের দৃশ্য দেখা গেছে ।সে ভিডিওতে ইয়াবা সেবন কারীরাও এনজিও কর্মী বলে অনেকে জানিয়েছেন ।টেকনাফ কক্সবাজার সড়কে বিভিন্ন পয়েন্টে চেক পোষ্ট রয়েছে ।
কিন্তু এসব চেক পোষ্টে এনজিও কর্মীদের গাড়ি ভালোভাবে চেক না করার সুবাদে তারা সহজেই ইয়াবা পাচার করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সচেতন মহল ।প্রশাসনিক এসব চেক পোষ্টে এনজিওদের গাড়িগুলো বিশ্বাসের উপর ছেড়ে না দিয়ে গুরুত্ব দিয়ে ভালোভাবে চেক করার অনুরোধও জানান সচেতন মহল।
সাম্প্রতিক সময়ে নারীরা কি অভিনব কায়দায় মাদক পাচার করে থাকে তা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর সহজেই বুঝা যায়।
গত ২০ জানুয়ারি (রবিবার) চট্টগ্রামে তিন হাজার পিস ইয়াবাসহ দুই রোহিঙ্গা নারীকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর।রবিবার সকালে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়া থানাধীন মেরিনার্স রোড থেকে একজনকে এবং অন্যজনকে কোতোয়ালি থানাধীন স্টেশন রোড এলাকা থেকে আটক করা হয়।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের (চট্টগ্রাম মেট্রো) উপ-পরিচালক শামীম আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। আটক দুই রোহিঙ্গা নারীর কাছ থেকে তিন হাজার পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।
আটক দুই নারী হলেন- ফাতেমা বেগম (৩৭) ও তৈয়বা খাতুন (২৪)। তৈয়বা তার পরিবার নিয়ে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে থাকেন। অন্যজন ফাতেমা উখিয়া উপজেলার হোয়াইক্যং গ্রামে বসবাস করেন। দু’জনই ২০১৭ সালে কক্সবাজার সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে আসেন।
গেলো ১৫ ফেব্রæয়ারী (সোমবার) ৮৯৫০০ পিচ ইয়াবা সহ টেকনাফে র্যাবের হাতে নারী ইয়াবা কারবারি আটক হয়েছে ।
জানা যায়, র্যাব-১৫র এক অভিযান চালিয়ে ৮৯ হাজার ৫০০ পিচ ইয়াবা সহ এক নারী ইয়াবা কারবারীকে আটক করেছে। আটককৃত ইয়াবা কারবারী হলো-টেকনাফ সদর ইউনিয়নের ১নাম্বর ওয়ার্ডের শাহাদাত হোসেনের স্ত্রী নুর সেতারা (২১)। সোমবার ১৫ ফেব্রæয়ারী রাত ১০ টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেছে।র্যাব-১৫ এর সহকারী পুলিশ সুপার ও সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) আবদুল্লাহ মোহাম্মদ শেখ সাদী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ।
তিনি জানান,টেকনাফের দরগারছড়ার অলি আহমদের বাড়ির পাশে শাহাদাত হোসেনের বাড়িতে প্রচুর পরিমান ইয়াবা ট্যাবলেট আছে খবর পেয়ে র্যাব-১৫ সদস্যরা সেখানে গেলে ইয়াবা কারবারী নুর সেতারা র্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে সেখান থেকে পালানোর সময় র্যাব-১৫ এর সদস্যরা তাকে আটক করে। পরে তার কাছে র্যাব সদস্যরা পালানোর কারণ জানতে চাইলে তার বাড়িতে ইয়াবা আছে বলে সে জানায়। পরে ইয়াবাকারবারী নুর সেতারার স্বীকারোক্তি মতে, সাক্ষীদের সামনে তার বাড়ি তল্লাশী করে র্যাব সদস্যরা ৮৯ হাজার ৫০০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।আটক নারী ইয়াবাকারবারীকে পরবর্তী আইনী প্রক্রিয়ার জন্য উদ্ধার করা ইয়াবা টেবলেট সহ টেকনাফ মডেল থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
আটককৃত ইয়াবা কারবারী দীর্ঘদিন ধরে টেকনাফের সীমান্ত এলাকা থেকে ইয়াবা টেবলেট এনে সারাদেশে বিকিকিনি করত বলে র্যাব-১৫ এর প্রেরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা করেছেন ।ধৃত ইয়াবা কারবারী নুর সোতারা’কে আসামি করে ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের সংশ্লিষ্ট ধারায় টেকনাফ মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করে তাকে আদালতে চালান দেওয়া হয়েছে বলে থানা সুত্রে জানা গেছে।
এখানে শেষ নয়, ১৬ ই ফেব্রæয়ারী টেকনাফে ৩ হাজার ইয়াবা ও ইয়াবা বিক্রির টাকাসহ এক মহিলা ইয়াবা কারবারী কে আটক করেছে টেকনাফ থানা পুলিশ । ১৬ ই ফেব্রæয়ারী ৪:১৫ ঘটিকার সময় টেকনাফ মডেল থানা পুলিশের একটি চৌকষ টিম অভিযান চালিয়ে টেকনাফ মডেল থানাধীন শাপলা চত্বর মোড় হতে রাশেদা বেগম (৩০), স্বামী-মোঃ জয়নাল আবেদীন, সাং-আলীর ডেইল (২ নং ওয়ার্ড), থানা- টেকনাফ কে তিন হাজার) পিস ইয়াবা ও মাদক বিক্রয়ের নগদ এক লক্ষ টাকাসহ স্থানীয় জনগন ও সাক্ষীদের সামনে আটক করেন।গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পর আদালতের মাধ্যমে কারাগাওে প্রেরণ কারা হয়েছে বলে জানান টেকনাফ মডেল থানা পুলিশ।
এবিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হাফিজুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,মাদক নির্মুল করতে টেকনাফ থানা পুৃলিশের জোরদার অভিযান অব্যাহত রয়েছে ।যেভাবে মাদক নির্মুল করা যায় সেভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে টেকনাফ থানা পুলিশ ।
Leave a Reply