গাইবান্ধা সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় কৌশলে জুয়ার আসরে ইচ্ছাকৃতভাবে ধার দেয়া টাকার সুদসহ আসল টাকা পরিষদে ব্যর্থ হওয়ায় ধর্ষণের শিকার হতে হয়েছে এক গৃহবধূকে।
সুদ গ্রহীতা মমিনুল ইসলাম এর স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করার অভিযোগ সুদখোর মহাজন ও জুয়ার আসর এর আয়োজক আনারুল ইসলাম নামে এক জুলুমবাজের বিরুদ্ধে।
এমন ধরণের ন্যাক্কারজনক ঘটনাটি ঘটেছে সুন্দরগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর ইউনিয়নের উজান বোচাগাড়ী গ্রামে।
ভুক্তভোগির স্বামী মমিনুল ইসলাম সুদের টাকা ফেরত দিতে না পারায় তিন মাস আগে জোর করে বাড়িতে প্রবেশ করেন, বাড়িতে লোকজন না থাকায়, আনারুল তাকে গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে ভিডিও ধারন করার অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ।
তিনি জানান তাঁর স্বামী একজন ভ্যান চালক খুব সহজ-সরল একজন সাদামাটা মনের মানুষ, প্রায়ই আমার স্বামী-কে আনারুল কৌশলে ৫শ ১ হাজার টাকা দিয়ে জুয়ার আসরে বসাতেন।
এমন কি জুয়ার আসর পাহারা দেয়ার জন্য, বাড়ি থেকে জোর করে নিয়ে যেতেন গোপন জুয়ার আসরে।
এরই মধ্যে তার স্বামী মমিনুল আনারুলের নিকট থেকে জুয়ার আসরে ২০ হাজার টাকা সুদে নিয়েছিলেন।
এভাবেই এক সময় ২০ হাজার টাকা সুদে-আসলে হয়ে যায় এক লক্ষ টাকা, সুদের টাকা চাইতে একদিন রাত ১১ টার দিকে বাড়ি এসে দরজা ধাক্কা ধাক্কি করেন আনারুল।
আমার স্বামী বাড়ি নেই বলা হলে, আনারুল বলে হয় টাকা দে, না হয়, দরজা খোল।
দরজা ধাক্কা ধাক্কির একপর্যায়ে দরজা খুললেই, আমার মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করেন, এমনকি সেই নগ্ন ছবি ও ভিডিও মোবাইলে ধারণ করেন।
ধর্ষণের পর বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সম্ভ্রমহানির ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ভাইরাল করার হুমকি প্রদান করেন।
এমনকি ওই সময় আনারুল তার দেয়া শর্ত অনুযায়ী চললে টাকা কিংবা ভিটেমাটি লিখে নিবেন না, বলেও প্রলোভন দেখিয়ে চলে যান।
এরপর আবারও সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে আরও কয়েকদিন ধর্ষণ করলে, লজ্জায় বাড়ি ছেড়ে বোনের বাড়ি পালিয়ে যায় গৃহবধূ।
কিছুদিন পর তিনি জানতে পান ১ লক্ষ টাকার জন্য তার স্বামী মমিনুলকে সুন্দরগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রার অফিসে নিয়ে গিয়ে বন্ধকের কথা বলে জোরপূর্বক বসতভিটার সাড়ে ৭ শতাংশ জমি লিখিয়ে ন্যায় লম্পট আনারুল।
কয়েকদিন পূর্বে এই জোরপূর্বক বসত ভিটা দখল নিয়ে ইট দ্বারা বাড়ি নির্মাণের উদ্যেগ গ্রহণ করেন আনারুল।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী গৃহবধূ ও স্বামী মমিনুল বিষয়টি সুন্দরগঞ্জ ধুবনী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে অবগত করলে তাৎক্ষণিকভাবে আনারুলকে ভুক্তভোগীর বসতভিটা থেকে বিতারিত করেছে পুলিশ।
এরপর গত বৃহস্পতিবার সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশ আনারুল-কে উপজেলা চত্বর থেকে গ্রেফতার করে ধর্ষণ মামলায় আদালতে সোর্পদ করেন।
ধর্ষণ মামলার বিষয়ে সুন্দরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লহিল জামানের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আসামী আনারুল একজন চিহ্নিত জুয়ারু এবং সুদখোর।
সে একজন কৌশলী প্রতারক, তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও বসতভিটা দখলের অভিযোগ ছিল।
আনারুল-কে গ্রেফতারের পর নিজেকে বাচিয়ে নিতে সাজু বলে পরিচয় দিয়ে ছিলেন।
গত ২৭ই জানুয়ারি ২০২১ইং শনিবার মামলা শেষে প্রতারক ও ধর্ষক আনারুল-কে আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
Leave a Reply