Advertisement

মুঠোফোনের ব্যবহার না জানা কৃষক ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলার আসামি 📺 Palong TV

ভালো করে মোবাইল ফোন ব্যবহার পারেন না কৃষক আবু জামান। নেই স্মার্টফোন কিংবা ফেসবুক আইডি। কিন্তু কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার পিরিজপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের কৃষক আবু জামানের বিরুদ্ধেই জিডিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আর এ মামলার আসামি হয়ে ঘরবাড়ি ফেলে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তিনি।

যাচাই-বাছাই না করেই মামলা রেকর্ড করে পুলিশ। এ ঘটনায় সুষ্টু তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি পরিবারের। আর পুলিশ বলছে, আবু জামানের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া না গেলে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।

স্ত্রী-সন্তান ও জমিজমা অনাবাদি রেখে পালিয়ে বেড়ানো কৃষক আবু জামানের সাথে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। চোখে-মুখে আতংকের ছাপ। ষাটোর্ধ্ব বয়সে পালিয়ে আছেন মাসের পর মাস। স্ত্রী-সন্তানের সাথে দেখা নেই। জমি অনাবাদি। কান্নায় তিনি কথা বলতে পারছিলেন না।

তিনি জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরেই প্রতিবেশী মিজানুর রহমান শিকদার তার নামে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এ মিথ্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তারের জন্য বারবার অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। কিছুদিন আগে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে বাড়িতে যাই। কিছুক্ষণ পরই সেখানে হাজির পুলিশের গাড়ি। তাই আবার পালাই।

তিনি বলেন ‘আমার ভালো মোবাইল ফোন নেই। নিজে ফোন করতে পারি না। ফেসবুক কী জানি না। অথচ আমি নাকি তার মৃত বাবার নামে কী কী ছড়াইছি।’

মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই চান তিনি। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

গজারিয়া গ্রামের কৃষক আবু জামানের ২ ছেলে, ৩ মেয়ে। তার স্ত্রী রেহেনা আক্তার বলেন, আমাদের বাড়ির জমিটি আত্মসাৎ করার জন্য অনেক দিন ধরে তারা আমাদের নানাভাবে হয়রানি করছে। তার (আবু জামান) নামে এর আগেও ৫টি মামলা দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন সৌদি আরবে থেকে কয়েক বছর আগে তিনি বাড়ি আসেন। এরপর নতুন করে তার পেছনে লাগে একটি গ্রুপ।

তিনি বলেন, স্বামী পলাতক। আমরা চরম আতংকে আছি। আমাদের ওপর যেকোনো সময় হামলা হতে পারে।

আবু জামানের বড় ভাই মোবারক হোসেন (৬৫) বলেন, আমার ভাই কৃষক আবু জামান ফেসবুক ব্যবহার করতে জানেন না। তার কোনো স্মার্টফোনও নেই। অথচ প্রভাবশালীদের মদদে তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। চরম আতংকে আছি আমরা।

গত বছরের ২০ অক্টোবর কটিয়াদী উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া গ্রামের মিজানুর রহমান শিকদার আল-আমিন ও আবু জামানের নামে কটিয়াদী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। এতে আসামিরা তার মৃত বাবার নামে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে মানহানিকর মন্তব্য ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে ফোনে কথা বলে মামলার বাদী মিজানুর রহমান শিকদার বলেন, আবু জামানের কথায় আল-আমিন নামে এক যুবক আমার মৃত বাবার নামে আপত্তিকর মন্তব্য বিভিন্ন মোবাইলে ম্যাসেঞ্জারে পাঠান। এজন্য তাকেও আসমি করা হয়েছে।

কটিয়াদী মডেল থানার ওসি এসএম শাহাদৎ হোসেন বলেন, মামলাটি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত হলে তাকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *